প্রকাশিত: Sun, Jun 18, 2023 11:55 PM
আপডেট: Sun, Jun 29, 2025 12:40 PM

সংকোচনমূলক স্মার্ট মুদ্রানীতি ঘোষণা গভর্নরের, মূল্যস্ফীতি কমাতে উঠিয়ে দেয়া হলো সুদের সীমা

বিশ্বজিৎ দত্ত: শুধু অর্থের যোগান বৃদ্ধি ও কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ নয় তার চেয়ে ঋণের সুদ বৃদ্ধি ও কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এই মুদ্রানীতিকে স্মার্ট মুদ্রানীতি বলে আখ্যায়িত করেছেন। 

তিনি বলেন, ২০২৩-২৪  অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের জন্য এই মুদ্রানীতিতে বেশ কয়েকটি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি, তবে এর মার্জিন নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এসএমএআরটি (স্মার্ট-সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ) নামের এ পদ্ধতিতে ছয় মাসের ট্রেজারি বিলের গড় হার ধরে ঠিক হবে রেফারেন্স। এরসঙ্গে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ যোগ করে এবং ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৫ শতাংশ সুদ যোগ করে ঋণ দিতে পারবে।

কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাত ও ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খরচ সামাল দিতে আরো ১ শতাংশ যোগ করতে পারবে সুদ হারে।

আর এক দিন মেয়াদী রেপোর (পুনঃক্রয় চুক্তি) সুদ হার ৬ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। রিভার্স রেপো হার (জুলাই থেকে এসডিএফ নামে পরিচিতি হবে) আগের ৪ দশমিক ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে।

রেপো ও রিভার্স রেপোর এই নতুন হার ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে। ব্যাংকগুলোর জন্য সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ ও ননব্যাংকিং ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ শতাংশ বৃদ্ধির মার্জিন করা হয়েছে। কলমানি (স্বল্প মেয়াদে ধার) রেট  ৮.৫০ করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি যাতে কমে এরজন্য অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এরজন্য একটি মনিটরিং পলিসি করা হয়েছে।

গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেপো হার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। এতে রেপো হার ৬ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশে উঠবে। সেই সঙ্গে রিভার্স রেপো হার ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে, ৪ দশমিক ২৫ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে তা হবে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। 

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এর মধ্য দিয়ে সমাজে অতিরিক্ত মুদ্রার সরবরাহে রাশ টানা হবে। মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় এই সিদ্ধান্তও কাজে আসবে বলে  মনে  করছেন গভর্নর। 

গভর্নর বলেন, আমাদের অর্থনীতি এখন ভাল আছে। গত বছরের এই সময়ের তুলনায় রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ শতাংশ। রেমিটেন্স বৃদ্ধি পেয়েছে ২ শতাংশ। তারপরেও  শুধুমাত্র ২টি বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। একটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অন্যটি রিজার্ভ। মূল্যস্ফীতি এখনো দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে কম রয়েছে। আমদানি নিয়ন্ত্রণ, সুদের হার বৃদ্ধি ও  মুদ্রা সংকোচনের কারণে মূল্যস্ফীতি কমে যাবে। রিজার্ভ আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈদেশিক ফাইনান্সে করা প্রকল্পগুলোর কাজ জোর দার করা হচ্ছে। রেমিটেন্সে প্রণোদনা অব্যাহত রাখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিকারকদের অর্থ দেশে আসতে শুরু করেছে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব